সড়কের মতো রাজনীতিতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে: কাদের
চট্টগ্রাম ব্যুরো ৬:২৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
-1.jpg)
দেশে সড়কের মতো রাজনীতিতেও বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, বেপরোয়া আচরণের কারণে সড়কের মতো রাজনীতিতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বুধবার দুপুরে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬ লেন বিশিষ্ট এপ্রোচ সড়ক নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিএনপির মন্তব্য ঠিক বেপরোয়া চালকের মতো। যেকোনো সময় তাদেরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে। তাছাড়া এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি নয়।
পরে নগরের কেবি কনভেনশন হলে আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মরণসভায় যোগ দেন মন্ত্রী।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আখতারুজ্জামান বাবু শুধু ব্যবসা করলে দেশের এক নাম্বার ব্যবসায়ী হতে পারতেন। কিন্তু রাজনীতিকে টাকা তৈরির মেশিন ভাবেননি তিনি। রাজনীতিকে তিনি পণ্য মনে করেননি। অনেকে রাজনীতিকে কেনা-বেচার পণ্য মনে করেন, বাবু ভাই সেটা করেননি।
তিনি জনগণের পাশে ছিলেন। শেখ হাসিনার প্রতি তার ভালোবাসার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। বাবু ভাইয়ের মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম শোকের দরিয়া হয়ে গিয়েছিল। তিনি মানুষকে ভালোবেসে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, মানুষ তার মৃত্যুর পরও তাকে ভালোবেসে তার ভালোবাসার প্রতিদান দিচ্ছে, যোগ করেন সেতুমন্ত্রী।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাদের বলেন, আমার মনে আছে, চাকসু নির্বাচনের সময় আমাদের কাছে টাকা-পয়সা ছিল না। ছাত্রলীগকে জেতাতেই হবে এই পণ নিয়ে আমরা এসেছিলাম। ১৪ দিনের মত আমি চট্টগ্রামে ছিলাম। বাবু ভাইয়ের সার্সন রোডের বাসায় আমি যেতাম, আমাদেরকে তিনি কখনো বুঝতে দেননি যে, আমাদের টাকার কোনো সংকট আছে। গোটা চাকসু নির্বাচনে সমস্ত অর্থ তিনি একা জোগান দিয়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, দল পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি যেমন সহযোগিতা দিতেন, তেমনি আমাদের নেত্রীর সংকটকালেও তিনি পাশে ছিলেন। নেত্রীকে সব ধরনের সহযোগিতা তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত দিয়ে গেছেন। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন চৌধুরী যখন মেয়র নির্বাচন করেন, তখন প্রচণ্ড রোদের মধ্যে লিফলেট নিয়ে ঘরে ঘরে, দোকানে দোকানে ক্যাম্পেইন করেছেন তিনি। আজকে আমরা পোস্টার লাগাতে, লিফলেট বিতরণ করতে লজ্জাবোধ করি। কিন্তু বাবু ভাইয়ের সেই অহংবোধ ছিল না, অহমিকা ছিল না।
কাদের বলেন, বাবু ভাইয়ের মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল, নেত্রীরও ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস তিনি বেশিদিন বেঁচে থাকেননি। নেত্রী আমাকে বললেন, বাবু ভাইকে আমি কিছু দিতে পারলাম না। বাবু ভাইকে মন্ত্রী করতে পারলে আমার ভালো লাগতো। কিন্তু তিনি বেঁচে থাকেননি। বাবু ভাইয়ের কথা স্মরণ করে তার রক্তের উত্তরসূরি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে নেত্রী আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য করেছিলেন এবং তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও দিয়েছিলেন। পরে নিজের যোগ্যতা, সততা দিয়ে জাবেদ পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন। নেত্রী তাকে প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী করার আগে আমাকে বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে জাবেদকেও পূর্ণমন্ত্রী করতে হয়। তার সততা আছে। জাবেদ পূর্ণমন্ত্রী হয়েছে তার সততা দিয়ে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ চৌধুরী, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে- ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপদপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।
এসবি
জাতীয়: আরও পড়ুন
